শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ০৪:৩৬ অপরাহ্ন

নির্বাচনের পর রাজস্ব আদায়ে কঠোর পদক্ষেপের তাগিদ

নির্বাচনের পর রাজস্ব আদায়ে কঠোর পদক্ষেপের তাগিদ

গণতন্ত্র, সুশাসন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং উন্নয়ন সবই সমান গুরুত্ব দিতে হবে। সেই সঙ্গে মানুষের কষ্ট হলেও জাতীয় নির্বাচনের পর রাজস্ব আদায়ে কঠোর উদ্যোগ নেওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর লেকশোর হোটেলে ‘অ্যানুয়াল বিআইডিএস কনফারেন্স অন ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক সন্মেলনে বক্তারা এমন তাগিদ দিয়েছেন। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) এ সম্মেলনের আয়োজন করেন। আগামী শনিবার পর্যন্ত তিন দিনের এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পামন্ত্রী এমএ মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান।

বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেনের সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউকের অলস্টার ইউনিভার্সিটির প্রফেসর এসআর ওসমানি। এছাড়া দিন ব্যাপী ছয়টি সেশনে প্রায় প্রায় ৮টি পেপার উপস্থাপন করা হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেছেন, গরিব মানুষ সুশাসন ও ভোটের অধিকার নিয়ে চিন্তিত নয়। তারা চায় উন্নয়ন ও ভাতের নিশ্চয়তা। সুশাসন ও ভোটাধিকার সুশীল সমাজের মাথা ব্যথার কারণ হলেও সাধারণ মানুষের নয়। তারা টিউবওয়েল চায়, ভালো টয়লেট চায়, কমিউনিটি ক্লিনিকে ভালো ভালো অষুধ চায়। ছেলেমেয়েরা স্কুলে যাতে যেতে পারে, তারা সেগুলোই চায়। তাদের চাওয়া আরও নাগরিক সমাজের চাওয়ার মধ্যে ব্যাপক ফারাক।

তিনি আরও বলেন, মাহাথির মোহাম্মদ ও সিঙ্গাপুরের লিকুয়ান ইউ দীর্ঘ দিন ক্ষমতায় ছিলেন। তারা উন্নয়নের ক্ষেত্রে রোল মডেল তৈরি করেগেছেন। সেখানে তো কোন প্রশ্ন নেই। কিন্তু বাংলাদেশ বেশি দিন ক্ষমতায় থাকলে বলা হয় স্বৈরশাসক। কিন্তু প্রশ্ন হলো উন্নয়নের দরকার আছে কিনা। দীর্ঘদিন একটি রাজনৈতিক দল সরকারে থাকায় মানুষের উন্নয়নে কাজ করছে কিনা।

প্রধানমন্ত্রীর সাবেক অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মসিউর রহমান বলেন, নির্বাচন দিয়ে একটি দেশের সব কিছুই বিচার করা যায় না। বিষয়টি হলো সমাজের একটি বড় পরিবর্তনের জন্য কিছু করলে সেটি মেনে নেওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে। উন্নত দেশে সবাই পরিবর্তনকে সাদরে গ্রহণ করে। আমাদের মতো দেশে পরিবর্তনকে মেনে নিতে কষ্ট হয়। ফলে সহিংস ঘটনার ঘটে। অর্থনীতিতে নানা পরিবর্তন আসে যা সমাজকে বা জনগনকে মেনে নিতে হয়। যখনই সমাজ এ পরিবর্তন মানতে চায় না তখন অস্থিতিশীল তৈরি হয়। অথচ পরিবর্তন ছাড়া উনন্নয়ন সম্ভব নয়।

প্রফেসর এসআর ওসমানি বলেন, বিচার ব্যবস্থা ও স্বাধীনতা একে অপরের সঙ্গে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। একটিকে বাদ দিয়ে আরেকটি নিশ্চিত করা অসম্ভব। আমরা যেহেতু দরিদ্র দেশ। তাই আমরা উন্নয়নকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছি। বিচার ও স্বাধীনতাকে পরের জন্য রেখে দিচ্ছি। সব মানুষকে সমানভাবে মূল্যায়ন করতে হবে। আমরা যদি সব মানুষকে সমানভাবে মূল্যায়ন না করি তাহলে সমাজে বৈষম্য বাড়বে। যা অর্থনৈতিক বৈষম্যও বাড়াবে। এই বৈষম্য কমাতে আমাদের কাঠামোগত ও মানবসম্পদ উন্নয়নে বিনিয়োগ দরকার। ধনীর সঙ্গে দরিদ্রের বৈষম্য আছে। ব্যাংক, স্বাস্থ্যসহ সব ক্ষেত্রে বৈষম্য আছে। জেন্ডার বৈষম্য আছে। নারীদের সেভাবে লেবার ফোর্সে সুযোগ দেওয়া হয় না। আমাদের লেবার ফোর্স পুরোপুরি কাজে লাগানো যায় না।  ফলে এটা শুধু আমাদের বর্তমানকেই নয়, বরং ভবিষ্যতেকে বাধাগ্রস্ত করে।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2021
Design By Rana